"আমি তো এসেছি চর্যাপদের অক্ষর গুলি থেকে
আমি তো এসেছি সওদাগরের ডিঙার বহর থেকে।"
- সৈয়দ শামসুল হক
বাংলার প্রতি, বাংলার গনমানুষের প্রতি ঠিক কতোটা টান থাকলে কেউ এভাবে নিজের পরিচয় উপস্থাপন করতে পারেন! "জাগো, বাহে, কোনঠে সবায়?- বিখ্যাত এই লাইটির মাধ্যমে সকলকে জেগে ওঠার আহ্বান জানিয়েছেন বাহের দেশের মানুষ, জ্বলেশ্বরীর রূপকার, সব্যসাচী লেখক, কবি সৈয়দ শামসুল হক।
১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ শে ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেছেন উত্তর বঙ্গের সীমান্তবর্তী জেলা কুড়িগ্রামে। শৈশবটাও এখানেই কেটেছে। তাইতো ভাওয়াইয়া খ্যাত এ জেলার মানুষের জীবন-জীবিকা, প্রকৃতি সর্বপরি সবকিছুই বিস্তর প্রভাব ফেলেছে এই সাহিত্যিকের অন্যন্য সৃষ্টিতে। কবিতা, উপন্যাস, নাটক, ছোটগল্প, অনুবাদ তথা সাহিত্যের সকল শাখায় সাবলীল পদচারণার জন্য উপাধীও পেয়েছেন 'সব্যসাচী।' ভালোবেসেই তিনি জন্মভূমি নদ-নদীময় কুড়িগ্রামের নামও দিয়েছেন জ্বলেশ্বরী। আর জ্বলেশ্বরীর এই রূপকারকে ভালবেসেই আমরা নাহয় 'জ্বলেশ্বরীর জলকুমার' আখ্যা দিলাম।
কর্মজীবনে একসময় পেশা হিসেবে সাংবাদিকতাকে বেছে নিলেও পরবর্তী সময়ে তিনি সার্বক্ষণিক সাহিত্য কর্মে নিমগ্ন থেকে বৈচিত্রময় সম্ভারে বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন। সাহিত্যের প্রায় সর্বক্ষেত্রেই বিচরণ রয়েছে এই লেখকের যার জন্য সব্যসাচী উপাধীও পেয়েছেন। তিনি গল্প কবিতা, উপন্যাস ও নাটক রচনা করেছেন। তার শিশুতোষ রচনাও রয়েছে অনেক। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অবদানের জন্য তিনি একুশে পদক,বাংলা একাডেমী পুরস্কার সহ অসংখ্য সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেছেন। তার প্রসঙ্গে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, "সৈয়দ শামসুল হকের রচনায় সমসাময়িক বাংলাদেশকে তুলে ধরা হয়েছে। আগের বড় লেখকেরা সকলেই গ্রামকেন্দ্রিক উপন্যাস বা গল্প লিখেছেন। সৈয়দ শামসুল হক নতুন উদীয়মান মধ্যবিত্তের কথা ভালো করে বললেন এবং মধ্যবিত্ত জীবনের বিকারকেও তিনি ধরলেন।"
লেখনীতে জ্বলেশ্বরীরর উপস্থিতি-ই হৃদয় থেকে জন্মভূমির প্রতি তার গভীর অনূভুতি ও টানের প্রমান মেলায়।অনেকেই বলেন, "কুড়িগ্রামকে কি দিয়েছেন সৈয়দ হক?" তাদের জন্য বলছি, সৈয়দ হক কী দেননি আমাদের। লেখনীতে জ্বলেশ্বরীর মাধ্যমে রূপক অর্থে কুড়িগ্রামকে, আধকোষা নদীর মাধ্যমে রূপক অর্থে ধরলা নদীকে গোটা বিশ্বের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়াটাই একজন সাহিত্যিক হিসেবে জন্মভূমির জন্য তার অনেক বড় অবদান নয় কি!
তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থঃ একদা এক রাজ্যে, বৈশাখে রচিত পঙক্তিমালা, অগ্নি ও জলের কবিতা, রাজনৈতিক কবিতা; গল্পঃ শীত বিকেল, রক্তগোলাপ, আনন্দের মৃত্যু, জলেশ্বরীর গল্পগুলো; উপন্যাসঃ বৃষ্টি ও বিদ্রোহীগগণ, বাস্তবতার দাঁত ও কড়াত; নাটকঃ পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়, নূরুলদীনের সারাজীবন, ঈর্ষা; শিশুতোষ গ্রন্থঃ সীমান্তের সিংহাসন।
২০১৬ সালের ২৭শে সেপ্টেম্বর জলেশ্বরীর এই কৃতি সন্তান পাড়ি জমান না ফেরার দেশে। তার-ই ইচ্ছা অনুযায়ী কুড়িগ্রাম সরকারী কলেজ প্রাঙ্গণে সমাধিস্ত করা হয় তাকে। প্রিয় জলেশ্বরীর(কুড়িগ্রাম) বুকেই চিরনিদ্রায় শায়িত হন সব্যসাচী এই লেখক।
আজ হয়তো সৈয়দ হক আমাদের মাঝে নেই কিন্তু রয়েছে কিছু কালজয়ী লেখনী যার মাধ্যমে একদিকে যেমন জলেশ্বরী(কুড়িগ্রাম) পরিচিতি পেয়েছে ঠিক, তেমনি সৈয়দ হকও বেচেঁ রয়েছেন এবং বেচেঁ রবেন এসব কালজয়ী সৃষ্টিতে।
অনেক অনেক ভাল থাকুন ওপারে, জ্বলেশ্বরীর জলকুমার।
আমি তো এসেছি সওদাগরের ডিঙার বহর থেকে।"
- সৈয়দ শামসুল হক
বাংলার প্রতি, বাংলার গনমানুষের প্রতি ঠিক কতোটা টান থাকলে কেউ এভাবে নিজের পরিচয় উপস্থাপন করতে পারেন! "জাগো, বাহে, কোনঠে সবায়?- বিখ্যাত এই লাইটির মাধ্যমে সকলকে জেগে ওঠার আহ্বান জানিয়েছেন বাহের দেশের মানুষ, জ্বলেশ্বরীর রূপকার, সব্যসাচী লেখক, কবি সৈয়দ শামসুল হক।
১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ শে ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেছেন উত্তর বঙ্গের সীমান্তবর্তী জেলা কুড়িগ্রামে। শৈশবটাও এখানেই কেটেছে। তাইতো ভাওয়াইয়া খ্যাত এ জেলার মানুষের জীবন-জীবিকা, প্রকৃতি সর্বপরি সবকিছুই বিস্তর প্রভাব ফেলেছে এই সাহিত্যিকের অন্যন্য সৃষ্টিতে। কবিতা, উপন্যাস, নাটক, ছোটগল্প, অনুবাদ তথা সাহিত্যের সকল শাখায় সাবলীল পদচারণার জন্য উপাধীও পেয়েছেন 'সব্যসাচী।' ভালোবেসেই তিনি জন্মভূমি নদ-নদীময় কুড়িগ্রামের নামও দিয়েছেন জ্বলেশ্বরী। আর জ্বলেশ্বরীর এই রূপকারকে ভালবেসেই আমরা নাহয় 'জ্বলেশ্বরীর জলকুমার' আখ্যা দিলাম।
কর্মজীবনে একসময় পেশা হিসেবে সাংবাদিকতাকে বেছে নিলেও পরবর্তী সময়ে তিনি সার্বক্ষণিক সাহিত্য কর্মে নিমগ্ন থেকে বৈচিত্রময় সম্ভারে বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন। সাহিত্যের প্রায় সর্বক্ষেত্রেই বিচরণ রয়েছে এই লেখকের যার জন্য সব্যসাচী উপাধীও পেয়েছেন। তিনি গল্প কবিতা, উপন্যাস ও নাটক রচনা করেছেন। তার শিশুতোষ রচনাও রয়েছে অনেক। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অবদানের জন্য তিনি একুশে পদক,বাংলা একাডেমী পুরস্কার সহ অসংখ্য সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেছেন। তার প্রসঙ্গে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, "সৈয়দ শামসুল হকের রচনায় সমসাময়িক বাংলাদেশকে তুলে ধরা হয়েছে। আগের বড় লেখকেরা সকলেই গ্রামকেন্দ্রিক উপন্যাস বা গল্প লিখেছেন। সৈয়দ শামসুল হক নতুন উদীয়মান মধ্যবিত্তের কথা ভালো করে বললেন এবং মধ্যবিত্ত জীবনের বিকারকেও তিনি ধরলেন।"
লেখনীতে জ্বলেশ্বরীরর উপস্থিতি-ই হৃদয় থেকে জন্মভূমির প্রতি তার গভীর অনূভুতি ও টানের প্রমান মেলায়।অনেকেই বলেন, "কুড়িগ্রামকে কি দিয়েছেন সৈয়দ হক?" তাদের জন্য বলছি, সৈয়দ হক কী দেননি আমাদের। লেখনীতে জ্বলেশ্বরীর মাধ্যমে রূপক অর্থে কুড়িগ্রামকে, আধকোষা নদীর মাধ্যমে রূপক অর্থে ধরলা নদীকে গোটা বিশ্বের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়াটাই একজন সাহিত্যিক হিসেবে জন্মভূমির জন্য তার অনেক বড় অবদান নয় কি!
তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থঃ একদা এক রাজ্যে, বৈশাখে রচিত পঙক্তিমালা, অগ্নি ও জলের কবিতা, রাজনৈতিক কবিতা; গল্পঃ শীত বিকেল, রক্তগোলাপ, আনন্দের মৃত্যু, জলেশ্বরীর গল্পগুলো; উপন্যাসঃ বৃষ্টি ও বিদ্রোহীগগণ, বাস্তবতার দাঁত ও কড়াত; নাটকঃ পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়, নূরুলদীনের সারাজীবন, ঈর্ষা; শিশুতোষ গ্রন্থঃ সীমান্তের সিংহাসন।
২০১৬ সালের ২৭শে সেপ্টেম্বর জলেশ্বরীর এই কৃতি সন্তান পাড়ি জমান না ফেরার দেশে। তার-ই ইচ্ছা অনুযায়ী কুড়িগ্রাম সরকারী কলেজ প্রাঙ্গণে সমাধিস্ত করা হয় তাকে। প্রিয় জলেশ্বরীর(কুড়িগ্রাম) বুকেই চিরনিদ্রায় শায়িত হন সব্যসাচী এই লেখক।
আজ হয়তো সৈয়দ হক আমাদের মাঝে নেই কিন্তু রয়েছে কিছু কালজয়ী লেখনী যার মাধ্যমে একদিকে যেমন জলেশ্বরী(কুড়িগ্রাম) পরিচিতি পেয়েছে ঠিক, তেমনি সৈয়দ হকও বেচেঁ রয়েছেন এবং বেচেঁ রবেন এসব কালজয়ী সৃষ্টিতে।
অনেক অনেক ভাল থাকুন ওপারে, জ্বলেশ্বরীর জলকুমার।
লেখাঃ মোছাঃ নুসরাত জাহান
1 Comments
nice
ReplyDelete